বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে অবশেষে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’য় রূপ নিয়েছে। এটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে ভারতের ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি) জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকালে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’য় রূপ নিয়েছে। ওড়িশার ভিতারকণিকা জাতীয় উদ্যান এবং ধামরা বন্দরের মধ্যবর্তী স্থানে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) মধ্যরাত ১২টা থেকে শুক্রবার (২৫ অক্টোবার) ভোর পর্যন্ত ছয় ঘণ্টা তাণ্ডব চালাবে শক্তিশালী সামুদ্রিক ঝড়টি। এ সময় দমকা বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার এবং কমপক্ষে ৬ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।
আরও পড়ুন : শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ডানার তাণ্ডব চলবে রাত থেকে ভোর পর্যন্ত
এর আগে, আইএমডি জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি ২৪ অক্টোবর রাত থেকে ২৫ অক্টোবর ভোরের মধ্যে ভারতের ওড়িশার পুরী এবং পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপের মধ্যবর্তী অংশে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আঘাত হানবে। এ সময় দমকা বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি) এসব তথ্য দিয়েছে। সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুস্তান টাইমস, লাইভমিন্টের প্রতিবেদনে এসব বলা হয়েছে, দুই রাজ্যে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এদিকে, ওড়িশা সরকার উপকূলীয় জেলাগুলোতে স্কুল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে এবং ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের শতভাগ সরিয়ে নেয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মধ্য-বঙ্গোপসাগর এবং উত্তর আন্দামান সাগরের সংলগ্ন এলাকায় নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ২২ অক্টোবর সকালে নিম্নচাপে এবং ২৩ অক্টোবর মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপর একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। আইএমডি তার সর্বশেষ বুলেটিনে জানিয়েছে।
আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তা সোমনাথ দত্ত বলেন, ‘ বুধবার থেকেই বৃষ্টি শুরু উপকূলের জেলায়। রাতে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে। অত্যন্ত ভারী বৃষ্টি পূর্ব মেদিনীপুর পশ্চিম মেদিনীপুর ঝাড়গ্রাম এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলায়। দমকা ঝড়ো হাওয়া ১০০ কিলোমিটার এর বেশি থাকবে এই জেলাগুলোতে। কলকাতা হাওড়া হুগলি উত্তর ২৪ পরগনা বাঁকুড়াতেও বাড়ি থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা থাকবে দমকা ঝড় বাতাস। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত দুর্যোগ বেশি থাকবে।
মৎস্যজীবীদের জন্য সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে বুধবার থেকে সমুদ্রে যেতে মানা। বৃহস্পতিবার উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ প্রতি ঘন্টায় ১২০ কিলোমিটার সর্বোচ্চ ১৩৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে বলে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। শুক্রবার পর্যন্ত সমুদ্রে যেতে মানা মৎস্যজীবীদের।