সময় শনিবার বিকেল ৫টা। বাংলাদেশ শিল্পকলার জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তন। এখানে অতিথি কানায় কানায় পরিপূর্ণ। একটু পরেই বরেণ্য অভিনেতা আবুল হায়াতের আত্মজীবনী বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হবে।
বর্ষীয়ান অভিনেতা আবুল হায়াত। ষাটের দশক থেকে নিয়মিত অভিনয় করে যাওয়া আবুল হায়াত শুধু অভিনেতাই নন, একাধারে নাট্যকার এবং নির্মাতাও। এবার ৮০ বছর পার করে ৮১ বছরে এসে ‘রবি পথ’ নামে একটি আত্মজীবনী বই লিখেছেন তিনি।
গতকাল এ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছে বাংলাদেশ অভিনয়শিল্পী সংঘ। সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন অভিনেত্রী অপি করিম। অনুষ্ঠানের শুরুতেই এই বইয়ের দুটি অনুচ্ছেদ তিনি পড়ে শোনালেন।
এরপর মঞ্চে উঠে একে একে বক্তব্য রাখেন গুণীজন তারিক আনাম খান, নরেশ ভুঁইয়া, সারা যাকের, মামুনুর রশিদ, মঞ্জুরুল ইসলাম। তাদের বক্তব্যের মাঝে একে একে বইয়ের বিভিন্ন বিষয়ে পাঠ করেন অভিনয়শিল্পী অপি করিম, ইন্তেখাব দিনার, রওনাক হাসান, দীপা খন্দকার ও আজাদ আবুল কালাম।
এরপর আত্মজীবনীমূলক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান শেষে জীবনসঙ্গীনি মাহফুজা খাতুন শিরিন ও দুই মেয়ে বিপাশা হায়াত ও নাতাশা হায়াতকে নিয়ে মঞ্চে ওঠেন আবুল হায়াত।
শুরুতে আত্মজীবনী প্রকাশ প্রসঙ্গে আবুল হায়াত বলেন, ‘বইটা কেন লিখেছি, এর কোনো জবাব নেই। ১০ বছর ধরে লিখেছি। বইটা পড়লেও সবাই তা টের পাবেন। আমি নিজেও তো অনেকের বই পড়েছি। ভাবলাম, লিখি না, আমার জীবনেও তো অনেক ঘটনা আছে। বই লেখার ক্ষেত্রে যে ঘটনা আমাকে সবচেয়ে বেশি আঘাত করেছে, মুর্শিদাবাদ থেকে একটি পরিবার চট্টগ্রামে এলো শুধু টেবিলে বসে একটা দাগ টানার কারণে। যখন বলা হলো, এটা হিন্দুস্তান, এটা পাকিস্তান। তার কারণে আমার মা-বাবা একটা দেশ ছেড়ে আরেকটা দেশে এলেন। বোঝালেন যে, এটা তোমার দেশ না, এটা তোমার দেশ। প্রথমত, সেখান থেকে কষ্টটা, ক্ষতটা আমি আমার লেখায় ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করেছি।’