ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকায় অভিযোগ আছে ইউটিউবার তৌহিদ আফ্রিদিকে নিয়ে। তৌহিদ আফ্রিদিকে বয়কটের ডাক দিতেও দেখা গেছে নেটিজেনদের অনেককে। মাসখানেক ধরে রোস্টিং ও ট্রল হতে দেখে বিভিন্ন অভিযোগে চুপ থাকলেও মঙ্গলবার বিকেলে মুখ খুলেছেন আফ্রিদি।
তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাট্যাস দিয়ে জানিয়েছেন, তিনি তখন যা করেছিলেন জানের ভয়ে করেছেন। নিজেকে পরিস্থিতির শিকার বলেও পুরো লেখাতে বর্ণনা করেন। এমনকি ডিবির হারুনের সঙ্গে তার সখ্য নিয়ে মুখ খুলেছেন তৌহিদ আফ্রিদি
যদিও ঘণ্টাখানেক পর অবশ্য দীর্ঘ স্ট্যাটাসটি আফ্রিদির অফিশিয়াল পেজে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। আত্মপক্ষ সমর্থন করে দেওয়া তৌহিদ আফ্রিদির সেই পোস্টে বলেন, ‘আসলে আমার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো নিয়ে আমি কখনোই কিছু বলতে চাইনি। কারণ, আমি কিছু বলতে গেলে সেখানে আরো অনেকের নাম যুক্ত হবে। তাই আমি কাউকে দোষ না দিয়ে নিজের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই। যতদূর জানি বোবার নাকি কোনো শত্রু থাকেনা। কিন্তু যতদিন যাচ্ছে শত্রু বেড়েই চলছে, সাথে বেড়েই চলছে আমাকে নিয়ে মিথ্যা বানোয়াট গল্পের সংখ্যা।’
আন্দোলনের সময় তিনি দুবাইতে ছিলেন উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশের যখন কোটা আন্দোলন শুরু হয় তখন আমি দুবাইতে ছিলাম। দেশের পরিস্থিতি তখন খুব খারাপ পর্যায়ে। আর তখনই আমি সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করি যে আমি দেশে আসছি এবং কোটা আন্দোলনকারী ভাইদের পাশে দাঁড়াবো। এই পোস্ট করার পরও আমি তেমন কোনো সমস্যার সম্মুখীন হইনি। আমি যখন শহীদ আবু সাঈদ ভাইয়ের ছবি আমার সকল আইডিতে পোস্ট করি, কিছুক্ষণ পরেই আমাকে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার থেকে জিয়াউল আহসান কল দিয়ে বলে “তোমাকে একটা জিনিস জানাতে চাই তুমি যে রাষ্ট্রবিরোধী পোস্টগুলো দিয়েছো এগুলো এক্ষুণি তোমাকে সরাতে করতে হবে। তোমার সাথে কে কে যুক্ত এগুলাতে?”
নিজের অবস্থান জানিয়ে বলেন, এইটা শোনার পর আমি সাথে সাথে ফোন কেটে দিই। কিছুক্ষণ পরেই আমাকে ডিবি হারুন কলে বলে ‘এই তুমি কার কল কাটছো? তুমি জানো? তুমি, তোমার বাবা, তোমাদের টেলিভিশন, সব শেষ করে দিবে। এখনি উনাকে কল ব্যাক করো, যা বলে শুনো।” আমি ভয়ে পোস্ট ডিলিট করে দিই। আমার এখনো মনে আছে আমি সেদিন ভয়ে আমার পরিচিত কারোরই ফোন ধরিনি। কিন্তু ডিবির হারুন আমাকে ফোন দিয়েই যাচ্ছিলো।
ডিবি হারুন আফ্রিদিকে ভয় দেখিয়েছিল জানিয়ে বলেন, পর দিন আবার ডিবি হারুন আমাকে ফোন দেয়। বলে তোমার নামে ওয়ারেন্ট বের হইছে, দেশে আসলেই কিন্তু তুমি এয়ারপোর্ট থেকে গ্রেপ্তার হবা। তখন আমি বলি, চাচা আমি তো পোস্ট ডিলেট করে দিছি। আমি আরো বলি চাচা পোস্ট তো আমি করি নাই। আমার এডমিন করছে। যদিও পোস্টটা আমি করেছিলাম কিন্তু তখন ভয়ে আমি তাকে এই মিথ্যাটা বলি। এটা শোনার পর উনি আমাকে বলে “তোমার ওইসব অ্যাডমিন সরাও।” এরপর উনি আমাকে একটা একাউন্টের লিঙ্ক দিয়ে বলে “ওরে একসেস দাও”। ডিবি হারুন আমাকে আরো বলে, আফ্রিদি দেশে আইসাই তুমি আগে আমার সাথে দেখা করবা, তোমার নামে কিন্তু জঙ্গী মামলা হইছে।