দেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে দৃঢ় সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের এই সরকার গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলো সম্পন্ন করার মাধ্যমে দেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করবে বলে জানান তিনি। তবে সেই নির্বাচন আগামী ১৮ মাসের মধ্যে হওয়া উচিত বলে মত দেন সেনাপ্রধান।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এ কথা বলেন। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থাটি।
তিনি বলেন, আমি তার পাশে আছি, থাকব। যা কিছুই হোক না কেন; যাতে তিনি তার মিশন সম্পন্ন করতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, আগামী দেড় বছরের মধ্যে দেশে গণতন্ত্রের উত্তরণ হতে হবে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত আগস্টের শুরুতে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এবং সেনাবাহিনী কোনো বাধা দেয়নি। আর এতেই শেখ হাসিনার ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যায় এবং ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর স্বৈরাচারী এই শাসক পদত্যাগ করে প্রতিবেশী ভারতে পালিয়ে যান।
সোমবার রাজধানী ঢাকায় নিজের কার্যালয়ে রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেনারেল ওয়াকার বলেন, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে তার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।
এছাড়া সামরিক বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্তি দেওয়ার একটি রূপরেখাও দিয়েছেন তিনি।
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, আমি তার (ড. ইউনূস) পাশে থাকব, যাই হোক না কেন। যাতে তিনি তার মিশন সম্পন্ন করতে পারেন।
বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণ আন্দোলনের অগ্রদূত ড. ইউনূস ১৭ কোটি মানুষের দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ প্রশস্ত করতে বিচার বিভাগ, পুলিশ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির কয়েক সপ্তাহ আগে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি বলেন, সংস্কারের পর গণতন্ত্রে উত্তরণ এক বছর থেকে দেড় বছরের মধ্যে করা উচিত। তবে এই সময়ে ধৈর্যের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান বলেন, আপনি যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, তাহলে আমি বলব— এই সময়সীমার মধ্যেই আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করা উচিত।