বাচ্চাকে বুদ্ধিমান হিসাবে গড়ে তুলতে চান? জেনে রাখুন এই ৮টি কৌশল

অল্প বয়সে আপনার শিশুর বুদ্ধিমত্তা(Intelligence) শাণিত করার দিকে নজর দিতে হবে। শিক্ষাবিদরা বহুবার সাবধান করেছেন, “শিশুদের জবরদস্তি করে প্রতিভাবান করে গড়ে তোলার চেষ্টা করলে হিতে বিপরীত হয়। তাদের নানারকম সামাজিক এবং মানসিক সমস্যা তৈরি হয়।”

কিন্তু আপনি যদি আপনার বুদ্ধিমান বাচ্চাকে কোনো চাপের ভেতর না ফেলে তার বুদ্ধি বিকাশে সহায়তা করতে চান, নীচে বর্ণিত কিছু পন্থা চেষ্টা করতে পারেন: বাচ্চাকে জিনিয়াস হিসাবে গড়ে তুলতে চান? বিচিত্র অভিজ্ঞতায় শিশুর বুদ্ধিমত্তা(Intelligence) বিকশিত হয়।

১.শিশুকে নানা ধরণের বিচিত্র সব অভিজ্ঞতার মুখোমুখি করুনঃ বুদ্ধিমান শিশুদের উদ্বুদ্ধ রাখতে, আগ্রহী রাখতে তাদেরকে অভিনব সব অভিজ্ঞতার মুখোমুখি করতে হয়। জীবনের বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা শিশুদের আত্মবিশ্বাস(Confidence) বাড়ায়। সাহস বাড়ায়। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, দিনের পর দিন একইরকম গতানুগতিক জীবন আলস্য, স্থবিরতা ডেকে আনে। নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ প্রতিকুলতার সাথে শিশুর খাপ খাওয়ানোর ক্ষমতা বাড়ায়।

২. তাদের প্রতিভা এবং আগ্রহকে উৎসাহিত করাঃ খেলাধুলো হোক বা সঙ্গীত হোক বা নাটকের ক্লাস, এসব নিয়ে আপনার শিশুর আগ্রহ থাকলে অল্প বয়স থেকে সুযোগ দিতে হবে। তাহলেই প্রতিভা বিকাশের সম্ভাবনা বাড়বে। তবে কিছু হওয়ার জন্য তাদের ওপর চাপ তৈরি করা হিতে বিপরীত হবে। সে যা নয়, তা বানানোর চেষ্টা করলে ক্ষতি ছাড়া লাভ হবেনা।

৩. বাচ্চার বুদ্ধিবৃত্তিক এবং আবেগের চাহিদাকে সাহায্য করতে হবেঃ সমস্ত শিক্ষার মূলে রয়েছে জানার আগ্রহ, জিজ্ঞাসা। স্কুল শুরুর আগেই শিশুরা অনেক প্রশ্ন করে। ধৈর্য না হারিয়ে সেসব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া জরুরী। তাদের বুদ্ধি বিকাশের জন্য এটা খুবই গুরুত্ব পূর্ণ। শিশু যত “কেন” এবং “কীভাবে” প্রশ্ন তুলবে, স্কুলে তার সাফল্যের সম্ভাবনা ততই বাড়বে।

৪. জানা বা শেখার চেষ্টার প্রশংসা করুন, তার ক্ষমতাকে নয়ঃ শিশুর শিক্ষা গ্রহণের প্রক্রিয়াকে বেশী প্রশংসা করুন, ফলাফলকে ততটা করবেন । নতুন কোনো ভাষা শেখার জন্য তার চেষ্টা, এমনকি সাইকেল চালানোর জন্য তার চেষ্টা – এসবকে উৎসাহিত করুণ। জানার চেষ্টা, শেখার চেষ্টা খুবই গুরুত্ব পূর্ণ। শেখার উৎসাহই পরবর্তী জীবনে তাকে সাফল্যের দরজায় নিয়ে যাবে।

৫. ব্যর্থতা ভীতিকর কিছু নয়ঃ শিশুর ভুলগুলোকে তার শিক্ষার অংশ হিসাবে দেখতে হবে। ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণকে একটি সুযোগ হিসাবে দেখতে হবে। ভুল করলে বাচ্চাদের ভবিষ্যতে সঙ্কট মোকাবেলার ক্ষমতা বাড়ে। অস্বাভাবিক মনে রাখার ক্ষমতা দেখলে বুঝবেন অপনার বাচ্চা হয়তো প্রতিভাধর(Talented)।

৬. কোনো লেবেল বা তকমা নয়ঃ কোনো লেবেল বা তকমা সেটে দিলে আপনার বাচ্চা অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে। ভবিষ্যতে কোনো ব্যর্থতার ভয়ে সারাজীবন সে কুঁকড়ে থাততে পারে।

৭. শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগঃ প্রতিভাবান শিশুরা নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ(Challenge) চায়।তাদের নিজের গতিতে শিখতে চায়। চলতি শিক্ষা ব্যবস্থার মাঝে তাদের সেই বিশেষ চাহিদা পূরণে বাবা-মাকে শিক্ষকদের সাথে নিয়মিত পরামর্শ করতে হবে।

৮. শিশুর সক্ষমতা যাচাই বাড়তি চাপ দেওয়ার জন্য স্কুলের সাথে দেন-দরবার করার আগে আপনার শিশুর শারীরিক-মানসিক সক্ষমতা(Ability) সস্পর্কে পরিষ্কার ধারনা নিতে হবে। আপনার শিশুর অনেক অজানা সমস্যা থাকতে পারে। যেমন ডিজলেক্সিয়া(Dyslexia), তার মনোযোগের ঘাটতি থাকতে পারে, তার হাইপার-অ্যাকটিভিটি বা অতিমাত্রায় চঞ্চলতার সমস্যা থাকতে পারে।

কিন্তু কীভাবে আপনির বুঝবেন আপনার বাচ্চা প্রতিভাধর? কিছু ইঙ্গিত:– মনে রাখার অস্বাভাবিক ক্ষমতা -খুব অল্প বয়সে পড়তে শেখা -অস্বাভাবিক কিছু আগ্রহ, শখ(Hobby) অথবা বিশেষ কিছু বিষয়ে গভীর জ্ঞান -বিশ্বের চলমান ঘটনাবলী সস্পর্কে ধারণা-সবসময় প্রশ্ন করা -উচ্চমানের রসিকতা বোধ -সঙ্গীত নিয়ে আগ্রহ – নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার আগ্রহ – খেলার সময় নতুন এবং অতিরিক্ত নিয়মকানুন তৈরির ক্ষমতা।

সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান। আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন। পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।