মাত্র চার দিন আগেই জাতীয় দল আর্জেন্টিনার হয়ে দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিক করেছিলেন ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসি। সেই কীর্তির ৪ দিন না পেরোতেই আবারও হ্যাটট্রিক করে বসলেন ফুটবলের ক্ষুদে জাদুকর, তবে এবার নিজ ক্লাব ইন্টার মায়ামির হয়ে। মেসির এই দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে নতুন এক ইতিহাসও সৃষ্টি করল ফ্লোরিডার দলটি।
রোববার (২০ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টায় ঘরের মাঠ ফোর্ট লডারডেলের চেজ স্টেডিয়ামে নিউ ইংল্যান্ড রেভলিউশনকে ৬-২ গোলে পরাজিত করে ইন্টার মায়ামি মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) এক মৌসুমে সবচেয়ে বেশি পয়েন্টের রেকর্ড ভেঙেছে। লিওনেল মেসির ১১ মিনিটের চমকপ্রদ হ্যাটট্রিক এই জয়ে মূল ভূমিকা পালন করে।
মায়ামি এই জয়ের মাধ্যমে ৩৪ ম্যাচে ৭৪ পয়েন্ট সংগ্রহ করে, ২২টি জয়, ৪টি হার ও ৮টি ড্র নিয়ে রেভলিউশনের ২০২১ সালের ৭৩ পয়েন্টের রেকর্ডকে অতিক্রম করেছে।
তবে ম্যাচটিতে মায়ামির শুরুটা ভালো হয়নি। ৩৪ মিনিটেই ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা ইন্টার মায়ামিকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করেন লুইস সুয়ারেজ, যিনি চার মিনিটের মধ্যে দুটি গোল করেন। এরপর বেঞ্জামিন ক্রেমাসচি ৫৮তম মিনিটের গোল মায়ামিকে ম্যাচে প্রথমবারের মতো লিড এনে দেন। তবে তখনও ম্যাচে মেসি ম্যাজিক বাকি।
দলকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব তখন অধিনায়ক মেসির হাতে, যিনি ৫৫তম মিনিটে মাঠে নামেন। মাঠে নেমে দ্রুতই তার প্রথম এমএলএস হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন ৮ বারের ব্যালন ডি’অর বিজয়ী। তিনি দলের চতুর্থ, পঞ্চম এবং ষষ্ঠ গোল করে দলের ইতিহাসেও স্থায়ীভাবে নাম লেখান।
এদিকে মেসি ও সুয়ারেজ মৌসুম শেষ করেন ২০টি গোল নিয়ে, যা তাদের গোল্ডেন বুট দৌড়ে দ্বিতীয় স্থানে রেখেছে, প্রথম স্থানে আছেন ডি.সি. ইউনাইটেডের ক্রিশ্চিয়ান বেন্টেকে। তবে মেসি লিগের সর্বোচ্চ গোল ও অ্যাসিস্ট মিলিয়ে ৩৬টি গোল সহযোগিতার সঙ্গে শীর্ষে আছেন, যা তিনি মাত্র ১৯ ম্যাচে অর্জন করেছেন।
ইন্টার মায়ামি এরই মধ্যে তাদের প্রথম এমএলএস সাপোর্টার্স শিল্ড জিতে নিয়েছে, যা ২০২০ সালে ক্লাবটির প্রতিষ্ঠার পর তাদের প্রথম এমএলএস শিরোপা। ২০২৩ সালে মেসির আগমনের পরপরই দলটি এমএলএস বনাম লিগা এমএক্স লিগস কাপের শিরোপা জিতেছিল।
এখন ইন্টার মায়ামি প্লে-অফের সব ম্যাচে হোম ফিল্ড অ্যাডভান্টেজ পাবে। শুক্রবার তারা প্লে-অফের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে সিএফ মন্ট্রিয়াল এবং আটলান্টা ইউনাইটেডের মধ্যে বিজয়ী দলের সঙ্গে।
মেসি এবং সুয়ারেজ ২০২৪ সালে দলের সাফল্যের পেছনে বড় অবদান রেখেছেন, কারণ তারা নিয়মিত মৌসুমে দলের মোট ৭৯টি গোলের মধ্যে ৪০টি গোল করেছেন। এই পারফরম্যান্সের জন্য তাদের দুজনকেই ২০২৪ সালের এমএলএস এমভিপি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।