আকস্মিক বন্যার কবলে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল। বন্যায় বাস্তচ্যুত হয়েছে লাখো মানুষ। অন্তঃসত্ত্বাসহ প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত চারজন।
অভিযোগ উঠেছে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দেওয়ায় এই আকস্মিক বন্যা। কিন্তু দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ভিন্ন কথা।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। যেখানে দাবি করা হয়, ডুম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশে বন্যা হয়েছে, এমন খবর প্রচারে উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি। কারণ, এটি সঠিক নয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদীর ক্যাচমেন্ট এলাকায় গত কয়েক দিন ধরে এই বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাংলাদেশে বন্যা মূলত বাঁধের নিচের দিকের এই বৃহৎ ক্যাচমেন্টের পানির কারণে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ডুম্বুর বাঁধটি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত থেকে বেশ দূরে অবস্থিত। বাংলাদেশ থেকে এটি ১২০ কিলোমিটার দূরে উজানে অবস্থিত। এটি একটি কম উচ্চতার (প্রায় ৩০ মিটার) বাঁধ যা বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে। এখান থেকে বাংলাদেশও ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পায়।
বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী সমগ্র ত্রিপুরা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে গত ২১ আগস্ট থেকে ভারি বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। ভারি প্রবাহের ক্ষেত্রে বাঁধগুলোতে স্বয়ংক্রিয় রিলিজ পরিলক্ষিত হয়েছে। অমরপুর স্টেশন একটি দ্বিপাক্ষিক প্রটোকলের অংশ যার অধীনে আমরা বাংলাদেশে বাস্তব সময়ের বন্যার তথ্য প্রেরণ করছি।
তথ্য অনুযায়ী, ২১ আগস্ট ভারতের স্থানীয় সময় দুপুর ৩টা পর্যন্ত বাংলাদেশকে ক্রমবর্ধমান বন্যার প্রবণতার ডেটা সরবরাহ করা হয়েছে। এ দিন ভারত সময় সন্ধ্যা ৬টায় বন্যার কারণে বিদ্যুৎবিভ্রাট হয়েছে। যার ফলে যোগাযোগের সমস্যা হয়েছে।
বিবৃতির শেষাংশে বলা হয়, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে অভিন্ন নদীতে বন্যা একটি যৌথ সমস্যা, যা উভয়পক্ষের জনগণের জন্য দুর্ভোগ সৃষ্টি করে। এর সমাধানের জন্য ঘনিষ্ঠ পারস্পরিক সহযোগিতা প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করা হয়।
এর আগে বুধবারই ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যমে ত্রিপুরায় কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির খবর দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, সতর্কতা জারি করা হয়েছে গোমতি নদীর তীরবর্তী বাসিন্দাদের জন্য। ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে ডুম্বুর জলাশয়ের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফলে খুলে দেওয়া হয়েছে বাঁধের গেট। সংবাদমাধ্যম জি-নিউজ জানায়, বন্যার কারণে ডুম্বুর জলবিদ্যৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দেওয়া হয়েছে। আর সেই কারণেই পানি ঢুকছে বাংলাদেশে।