ঢালিউডের জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনিকে ঢাকা বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ এবং পরীমনির বন্ধুর পরিচিত অমিসহ ৬ জনের নামে সাভার থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলার পর প্রধান আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তিন নারীসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এই ঘটনার পর সবার প্রশ্ন ছিল, ঢাকা বোট ক্লাবে পরীমনি গেলেন কিভাবে। সে প্রশ্নেরও যথাযথ উত্তর দিয়েছেন পরীমনি। তিনি বলেছেন, তার কস্টিউম ডিজাইনার জিমির বন্ধু অমি কৌশলে তাদের ঢাকা বোট ক্লাবে নিয়ে গেছেন।
কে এই অমি?
পরীমনি জানিয়েছেন, অমি হচ্ছে তার কস্টিউম ডিজাইনার জিমির বন্ধু। জিমির পরিবারের সঙ্গে অমির সম্পর্ক রয়েছে। দুই বছর আগে অমির সঙ্গে পরিচয় করে দিয়েছিল জিমি। তখন থেকেই তাকে চেনেন। অমি ব্যবসা করে।
অমির ফাঁদে পরীমনি!
পরীমনি বলেন, আমার নানার অসুস্থতার সংবাদ পেয়ে ৮ জুন অমি বনানীর বাসায় আসে। ওইদিন নানার জন্য অনেক খাবারও নিয়ে আসে। ওইদিন রাতে আমার সঙ্গে কিছু একটা বিষয় নিয়ে বসতে চেয়েছিল অমি, কিন্তু আমি তাকে সময় দিতে পারিনি। পরে তাকে অন্য একদিন আসতে বলি। এর আগেও কয়েকবার কিছু একটা নিয়ে বসবে বলে সময় চেয়েছিল। এরপর ৯ জুন জিমিকে ফোন করে সময় চায় অমি। তখন তাকে রাত ৯টায় আসতে বলি। কিন্তু অমি রাত পৌঁনে ১১টার দিকে আসে। এবারও আসার সময় অনেক খাবার নিয়ে আসে অমি।
পরীমনি জানান, অমি টাকা বিনিয়োগ করবেন আর পরীমনি বিনিয়োগের একটা পার্ট হবেন- এমন প্রস্তাব দেওয়া হয়। এমন একটা বিষয় ছিল, আলোচনা শেষ না করে উঠতে পারছিলেন না। এর মধ্যে অমির একটা ফোন আসে। অমি জানায়, তার মা অসুস্থ। ওষুধ কিনে নিয়ে যেতে হবে। বাসার সবাই বলল, তাকে চলে যেতে। কিন্তু আমি মানবিকভাবে যেতে দিতে পারিনি। বলেছি চলো আমরা তোমাকে নামায় দিয়ে আসি।
পরীমনি বলেন, আমার ছোটবোন, আমি ও জিমি যে যে অবস্থায় ছিলাম সেভাবেই বেরিয়ে পড়ি। বাসায় বলি তোমরা খাওয়া শুরু করো আমরা আসছি। আমরা উত্তরা গিয়ে একটি ফার্মেসিতে নেমে ওষুধ কিনি। এরপর অমির বাসার দিকে রওয়ানা হই।
পথে অমি গাড়ি দাঁড়াতে বলেন। তিনি বলেন, দুই মিনিট কাজ আছে। আমি সেরে আসছি। অমি ভেতরে যেতে চায়। কিন্তু গেট বন্ধ থাকায় ফিরে আসে গাড়ির কাছে। একটা ফোন করে কি যেন জানায়। তখন গেট খুলে দেয়। এরপর তিনি আবার ভেতরে যান। যাওয়ার সময় অমি জানায় তোমরাও নামতে পারো। ক্লাবটা অনেক সুন্দর।
পরীমনি জানান, বোন বনি অসুস্থ বোধ করায় তার ওয়াশরুমের প্রয়োজন ছিল। এজন্য জিমিকে গাড়িতে রেখে বনিকে নিয়ে ক্লাবের ভেতরে যান তিনি। এরপর দুজন লোক এসে বলেন, ম্যাডাম বসেন। অমিও বলে, কফি খান। কফি এনে দিলে জিমি এসে তা টেস্ট করে বলেন যে এটা কফি নয় অন্য কিছু। পরে খেতে না চাইলে নাসির উদ্দিন মাহমুদ জোর করে মুখে বোতল ঢুকিয়ে দিয়ে মদ খাওয়ান। এরপর শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেন। এক পর্যায়ে ক্লাবের উপরে নিয়ে গিয়ে সেখানে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করা হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা পর সেন্সলেস অবস্থায় তাকে নামানো হয়। ঘটনার পর থানায় যোগাযোগ করেও কোনো কাজ হয়নি। এরপর তিনি ফেসবুকে অভিযোগ করে স্ট্যাটাস দেন।
এক প্রশ্নের জবাবে পরীমনি বলেন, অমি আমাদের সঙ্গে এমন ব্যবহার করেছে যে তাকে সন্দেহ করার অবকাশ ছিল না। তিনি যে এমন কাজ করবেন তা বিশ্বাসই হয়নি। এরপরও বলতে হবে তিনি এমন কাজই করেছেন। নিশ্চয় অমির সঙ্গে নাসিরের যোগাযোগ ছিল। ঘটনা যে পূর্ব পরিকল্পিত ছিল তা স্পষ্ট।