তারেক রহমানের সঙ্গে মৌসুমীর ছবি নিয়ে মুখ খুললেন ওমর সানী

ছাত্র-জনতার রক্ত আর হাজারও প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশে দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছরের স্বৈরাচার শাসনের অবসান হয়েছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর অনেক বিষয় সামনে আসছে। বছরের পর বছর জমিয়ে রাখা গল্প কিংবা সাহসের অভাবে অনেক কিছুই সামনে আসেনি। তেমনি একটি বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা ওমর সানী।

বিএনপি সরকারের সময় তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানে বেলুন ওড়ানোর ছবিতে দেখা যায় ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়িকা মৌসুমীকে। ছবিতে ছিলেন মৌসুমী, এর জন্য তার পরিবারকে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শুধু এই ছবির জন্য তাদের পরিবারে নেমে আসে ঝড়। সম্প্রতি এক ভিডিওবার্তায় সেসব জানিয়েছেন ওমর সানী।

ওমর সানীর একটি পেজ থেকে লাইভে এসে কথা বলেন অভিনেতা নিজেই। তিনি বলেন, ‘অজানা কথা একদিন তো আসবেই আর সেদিন হচ্ছে আজকে। আল্লাহ ছাড় দেন ছেড়ে দেন না’ ক্যাপশন দিয়ে ভিডিও বার্তায় বিএনপির একটি অনুষ্ঠানে মৌসুমীর উপস্থিত থাকার সেই দুটি ছবি তুলে ধরেন ওমর সানী।

অভিনেতা আরও বলেন, ‘এই ছবিটা বহু বছর আগের। ছবিটা নিয়ে আমার পরিবারে একটা প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় গেছে। আমাদের চলচ্চিত্রের কিছু অসাধু মানুষ শিল্পী সমিতি বা যেকোনো জায়গা থেকে হোক, দু-একজন তখনকার প্রশাসনের সাথে হাত মিলিয়ে এই কাজটা করে যেন আমরা চলচ্চিত্রের কোনো জায়গায় অবস্থান করতে না পারি, এটা ছিল ড্যাম পলিটিক্স। এবং এই পলিটিক্সে তারা সফল হয়েছিল। ওই যে সবাই বলে, আমি একা কেন, হাজার হাজার, লাখো কোটি মানুষ বলে—বিভৎস একটা সময় গেছে, আমি সেই সময়কালের কথা বলছি।’

ছবিগুলো ব্যাখ্যা দিয়ে ওমর সানী বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা অনুষ্ঠান হয়েছিল সেদিন। ম্যাডাম খালেদা জিয়া তখন রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন। আর আমাদের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক সাহেব, তার স্ত্রী জোবাইদা ম্যাডাম সেখানে অবস্থান করছিলেন। তো দেখেন এই পাশে কিন্তু ববিতা আপার ছবি (লিজেন্ড ববিতা আপা), অন্য পাশে দেখবেন আমাদের প্রয়াত নায়ক মান্না। ওই সময়ে আমি কক্সবাজারে থাকার কারণে এ অনুষ্ঠানে আসতে পারিনি।’

ক্ষোভ ঝেড়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ছবি কিন্তু সবার সাথে থাকতে পারে। একজন ব্রোথেল গার্লের সাথে থাকতে পারে, একজন চোরের সাথে থাকতে পারে, একজন ডাকাতের সাথে থাকতে পারে, সবার সাথেই থাকতে পারে। আমরা কিন্তু জানি না, আমার সাথে দাঁড়িয়ে কোন মেয়েটা ছবি তুলছে, কোন ছেলেটা ছবি তুলছে, তার রাজনৈতিক পরিচয় কী? আমাদের জানার কথা না, কারণ আমরা শিল্পী। অনেকেই কোট করে অনেকে বলেন, আপনার সাথে তো অমুকের ছবি আছে। ওই বেডা! তুই দেখছ না বেডা? আমরা একজন শিল্পী, আমাদের সাথে সবার ছবি থাকতে পারে। তাই বলে আমরা কিন্তু পচে যাইনি।’

সানীর ভাষায়, ‘আজকে যে ঝড় আমি ওমর সানী ফেস করেছি, মাত্রই হেঁটে আসছি, প্রচুর ঘামছি—আর এই কথাগুলো বলতে গিয়ে প্রচণ্ড কষ্ট পাচ্ছি। ঘাম ছুটছে আমার শরীরে। সেই বিভৎস ঘটনা বহু বছর পরে আপনাদের জানালাম, আপনাদের বিচার দিইনি। বিচার তো আল্লাহ করবেন।’

বিচার চেয়ে এই চিত্রনায়ক বলেন, ‘যারা এগুলো করেছে, তাদের বিচার হয়েছে এবং আরও সুন্দর বিচার হওয়ার অপেক্ষায় থাকলাম।’