দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকেও। প্রশ্ন ওঠেছে কত টাকার আমদানি ব্যয় রেখে বিদায় নিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার।
চলতি মাসের শুরুতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংকে মোট রিজার্ভ ছিল ২০.৪৮ বিলিয়ন ডলার। তবে এ কদিনের অস্থিরতায় রিজার্ভ আরও কমেছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা।
শনিবার (১০ আগস্ট) নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। সবচেয়ে শঙ্কার ব্যাপার হচ্ছে, এর মধ্যে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ ১৫ বিলিয়ন ডলারের নিচে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আপাতত রিজার্ভ নিয়ে কোনো তথ্য দেয়া ঝুঁকিপূর্ণ। রিজার্ভের ব্যাপারে এ মুহূর্তে কিছু জানানো সম্ভব না।
এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্ট্রাডিজের (বিআইআইএসএস) গবেষণা পরিচালক মাহফুজ কবির বলেন, ‘আমাদের জানা মতে, ব্যাংকে বর্তমানে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ ১২ বিলিয়ন ডলারের মতো। এত বিশাল অর্থনীতি সামাল দেয়ার জন্য এ পরিমাণের রিজার্ভ অপ্রতুল।’
সরকার পতনের পর ৭ আগস্ট থেকে ব্যাপক আন্দোলনের মুখে চার ডেপুটি গভর্নর, বিএফআইইউ প্রধান ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং উপদেষ্টা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
পরবর্তীতে শুক্রবার (৯ আগস্ট) পদত্যাগ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এর আগে, গভর্নরের পদত্যাগের দাবিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শতাধিক কর্মকর্তা বিক্ষোভ করেন।
যেভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বিক্ষোভ হচ্ছে এবং অস্থিরতা তৈরি হয়েছে তাতে করে গচ্ছিত রিজার্ভের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে রিজার্ভ চুরির ইতিহাস আছে। এ মুহূর্তে বড় বিষয় হচ্ছে রিজার্ভে যে পরিমাণ অর্থ আছে তা আদৌ নিরাপদ কিনা। রিজার্ভের অর্থের নিরাপত্তা প্রদানে দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।