এই ৫টি কারণেই হতে পারে পাইলস! অবহেলা না করার পরামর্শ চিকিৎসকের

পাইলস অসুখটি নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছে অনেকের মনেই। তবে মনে রাখবেন, এই সমস্যার পিছনে আছে আপনার কিছু বদভ্যাস। দেখা গিয়েছে কোষ্ঠকাঠিন্য, চাপ দিয়ে মলত্যাগের মতো সমস্যা এই অসুখ ডেকে আনে, জানালেন বিশিষ্ট চিকিৎসক।

সব ভালো যাঁর পেট ভালো! এই কথাটা তাঁরা হাড়ে হাড়ে টের পান, যাঁরা পাইলসে ভোগেন। এই রোগে আক্রান্ত মানুষের বহু জটিলতা দেখা যায়। এমনকী তাঁরা মলত্যাগ করতেও ভয় পান। তবে মাথায় রাখবেন আমাদের কিছু ভুলভ্রান্তির কারণেই এই অসুখ হয়ে থাকে। সেই অভ্যাস বদল করতে পারলেই রোগের ছুটি।

পাইলস অসুখটি নিয়ে মানুষের ভয়-ভীতি স্বাভাবিক। এই রোগ থাকলে মলের সঙ্গে রক্ত বের হয়। এই কারণে মানুষ ভয় পেয়ে যান। এছাড়া কারও কারও খুব ব্যথা হয়। এই সমস্ত বিষয় মিলিয়ে রোগটি খুব ঝামেলায় ফেলে মানুষকে। তাই এই অসুখকে প্রথমেই বাগে আনতে হবে।

এই প্রসঙ্গে কলকাতা শহরের বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা: আশিস মিত্র জানালেন, এখন প্রচুর মানুষ আক্রান্ত অর্শের সমস্যায়। এক্ষেত্রে আমাদের মলদ্বারের ভিতরে থাকা রক্তনালী প্রথমে ফুলে যায়। তারপর তা কেটে যায়। এই কারণে মলের সঙ্গে রক্ত বের হয়।
মাথায় রাখবেন প্রথমেই চিকিৎসা হলে খুব সহজে অসুখ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে জানতে হবে কেন অর্শ হচ্ছে।

১. কোষ্ঠকাঠিন্যই মূল আসামী
​কোষ্ঠকাঠিন্য প্রচুর মানুষের রয়েছে। এই অসুখ খুব সমস্যায় ফেলে সকলকে। এর থেকে হতে পারে পাইলস। আসলে মল যদি শক্ত হয় তবে ভিতরের মাংসপেশি ফুলে যেতে থাকে। তারপর তা কেটে যায়। এই পরিস্থিতিতে সাবধান হন। শাক, সবজি বেশি করে খান। এতে থাকা ফাইবার মলত্যাগে সাহায্য করবে। এছাড়়া দিনে অন্ততপক্ষে ২.৫ লিটার জলপান করুন। তবেই দেখবেন অসুখ দূর হয়েছে। তাই অকারণ চিন্তা না করে ডায়েটের দিকে নজর ফেরান।

২. মলত্যাগে অহেতুক চাপ
ডা: মিত্রের কথায়, অনেকেই চাপ দিয়ে মলত্যাগ করে থাকেন। এই কাজটা করা কিন্তু ঠিক হবে না। কারণ এই অভ্যাসের দরুন অনেক সময় মলদ্বারের অন্দরে চাপ পড়ে। এর থেকে জটিলতা বাড়তে থাকে। তাই এই ভুল আর নয় বললেই চলে। এবার থেকে মলত্যাগ করার সময় স্বাভাবিক থাকুন। খুব বেশি চাপ দিতে যাবেন না। বেশি চাপ দিলেই রক্তপাত হতে থাকবে। তাই এই ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করুন।

৩. লিভার নিয়ে সাবধান
এখন লিভারের সমস্যা বাড়ছে। মানুষ এই অঙ্গের প্রতি খেয়াল করছেন না। ফলে জটিলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রথমে ফ্যাটি লিভার। তারপর সেই অসুখ গড়িয়ে যাচ্ছে লিভার সিরোসিসে। এই অসুখ কিন্তু প্রাণহানী করতে পারে। দেখা গিয়েছে যে সিরোসিসে আক্রান্তদের পাইলস বেশি মাত্রায় হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এমন লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যান। চেষ্টা করুন যত দ্রুত সম্ভব ওষুধের মাধ্যমে রোগ নিয়ন্ত্রণ করার। এটাই সুস্থ থাকার চাবিকাঠি।

৪. পিৎজা, বার্গার পাইলসের বন্ধু
ডা: মিত্রের কথায়, এখন জাঙ্ক ফুডের যুগ। এই ধরনের খাবারে রয়েছে তেল, মশলা। খুব বেশি পরিমাণে ক্যালোরিও থাকে। এই কারণে জাঙ্কফুড এমনিতেই খারাপ। এর পাশাপাশি মনে রাখতে হবে যে এই ধরনের খাবারে ফাইবার নামমাত্র থাকে। ফলে মল নরম হয় না। তাই এই ধরনের খাবার রোজকার রোজ খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। আর তার থেকে হতে পারে পাইলস। তাই প্রথমেই সচেতন হওয়ার চেষ্টা করুন। তবেই রোগ থেকে বাঁচতে পারবেন। এবার পিৎজ, বার্গার বা বাইরের চপ নয়। বাড়ির খাবার খান।

৫. পাঁঠার মাংসের লোভ
সব ধরনের মাংসের মধ্যে রেডমিট খুবই খারাপ। এই খাবার কিন্তু শরীরে জটিলতা তৈরি করে। এর প্রোটিন শরীরে সহ্য হয় না। এমনকী ফ্যাটও খারাপ। তাই শরীর অসুস্থ হয়। এমনকী কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটের সমস্যা দেখা দেয়। এবার থেকে সচেতন হওয়ার চেষ্টা করুন। খাওয়া ছাড়ুন পাঁঠার মাংস। তবেই সুস্থ থাকতে পারবেন।

বিদ্র: প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।