এস আলমের অর্থপাচারে দেউলিয়া হওয়ার পথে যে ৬ ব্যাংক

শুধু নিজের বা প্রতিষ্ঠানের নামেই নয়, স্ত্রী, সন্তান, ভাই থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত সহকারী এমনকি অফিসের কর্মচারীর নামেও ব্যাংকঋণ নিয়েছেন এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলম। আর এভাবে অন্তত ছয়টি ব্যাংককে প্রায় দেউলিয়া করেছেন তিনি। সে টাকায় এশিয়া, ইউরোপের নানা দেশে গড়েছেন সাম্রাজ্য। প্রাথমিক তদন্তে সেই অর্থপাচারের সত্যতা পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলম। তাঁর বিরুদ্ধে আনা এক লাখ ১৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা অর্থপাচারের অভিযোগে তদন্তে নামে সিআইডি। আর এতে মিলেছে প্রাথমিক প্রমাণ।

সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট বলছে, সাইফুল আলমসহ তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি ও সংঘবদ্ধ অপরাধের মাধ্যমে অর্থপাচারের তথ্য মিলেছে। তাঁরা সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, সাইপ্রাস ও ইউরোপে অর্থপাচার করে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রয় ও ব্যবসা পরিচালনা করেছেন।

সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক একরামুল হাবীব বলেন, ‘এস আলমের নিকটআত্মীয় যাঁরা রয়েছেন তাঁদের নামে টাকাগুলো পাচার হয়েছে। এগুলো হুন্ডির মাধ্যমেও হতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’

সিআইডি জানায়, পাচার করা অর্থে সিঙ্গাপুরে প্রায় ২৪৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকার পরিশোধিত মূলধনে ‘ক্যানালি লজিস্টিক প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে প্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছে। আর এই অর্থপাচারে প্রায় দেউলিয়া অন্তত ৬টি ব্যাংক। এই ব্যাংকগুলো হলো— ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক।

সিআইডি কর্মকর্তা একরামুল হাবীব বলেন, ‘আমাদের তথ্য অনুযায়ী, ছয়টি ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে তা পাচার করা হয়েছে।’

এ ছাড়া বিদেশে শেল কোম্পানি নামে ভুয়া প্রতিষ্ঠান খুলে অফশোর ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা পাচারেও অভিযুক্ত এস আলম গ্রুপ।

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট পতন হয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের। ওইদিন পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পরই আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ এস আলমের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু হয়।